মাকড়শার ঘর দুর্বলতম ঘর

পবিত্র কুরআনের ২৯ নাম্বার সূরার নাম হচ্ছে ‘মাকড়শা’ বা আনকাবুত।
 
مَثَلُ الَّذِينَ اتَّخَذُوا مِن دُونِ اللَّهِ أَوْلِيَاء كَمَثَلِ الْعَنكَبُوتِ اتَّخَذَتْ بَيْتًا وَإِنَّ أَوْهَنَ الْبُيُوتِ لَبَيْتُ الْعَنكَبُوتِ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ
 যারা আল্লাহর পরিবর্তে অপরকে সাহায্যকারীরূপে গ্রহণ করে তাদের উদাহরণ মাকড়সা। সে ঘর বানায়। আর সব ঘরের মধ্যে মাকড়সার ঘরই তো সর্বাধিক দুর্বল, যদি তারা জানত। [সুরা আনকাবুত – ২৯:৪১]
The example of those who have adopted patrons other than Allah is like the spider that has made a house, while indeed the weakest of houses is the house of the spider. If only they know.
 
১৪০০ বছর আগে কোরআন বলেছে মাকড়সার ঘর সবচেয়ে দুর্বল। প্রশ্ন হচ্ছে বিগত ১৪০০ বছরে হাজার হাজার নতুন প্রজাতির পোকা-মাকড় আবিষ্কার হয়েছে। কিন্তু মাকড়শার চাইতেও দুর্বল ঘর বানাতে পারে, এমন কোন উদাহরণ কি পকৃতিতে আছে?। নেই, কারন একমাত্র মাকড়শার ঘরই মুখের ফুঁ দিয়েই ভেঙ্গে ফেলা সম্ভব।পৃথিবীর বেশীরভাগ প্রাণীই ঘর বানায়। কিন্তু মাকড়শার ঘর পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণীর ঘরের চাইতে সম্পুর্ন আলাদা।
 
গবেষণায় দেখা গেছে মাকড়শার ঘর বানাতে যে ফাইবার বা সিল্ক ব্যবহার করে সেটি সমান মাপের স্টিলের চাইতেও মজবুত। কিন্তু মাকড়শার সিল্ক মানুষের চুলের চাইতে প্রায় ৩০ গুন সরু। মানুষের চুলের গড় ব্যাস প্রায় ৭০ মাইক্রন, আর মাকড়শার সিল্কের গড় ব্যাস ২ থেকে ৪ মাইক্রন।  আর তাই ঘর বানাতে মাকড়শা যে সিল্ক ব্যাবহার করে সেটি অনেক শক্ত হলেও অত্যন্ত সরু হবার করার কারনে মজবুত নয়। মাকড়শার ঘর এতই দূর্বল যে খুব সহজেই চাইলে মুখের ফুঁ দিয়েই মাকড়শার ঘর ভেঙ্গে ফেলা যায়।  পৃথিবীতে অনেক স্পেসিসের প্রাণী থাকলেও মাকড়শার ঘরের মত এর দূর্বল প্রকৃতির ঘর বানাবার উদাহরণ প্রকৃতিতে আর নেই।
 

                                              কুরআনে মাকড়শার ঘর

 ছবিঃ মানুষের চুলের চাইতেও ৩০ গুন সরু মাকড়শার সিল্ক

মাকড়শার ঘর দুর্বলতম ঘর. সুরা আনকাবুত

 
 তাছাড়া মাকড়শার ঘরের সাথে অন্যান্য প্রাণীদের ঘরের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য আছে।
 যে কোন ঘরের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সেটি প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা বা রোদ, বৃষ্টি ইত্যাদি থেকে কম-বেশি রক্ষা করবে। কিন্তু মাকড়শার ঘর বিন্দু মাত্র রোদ বা বৃষ্টি থেকে প্রটেকশন দেয় না।
 
 ঘরের আরেকটি বৈশিষ্ট হচ্ছে নিরাপত্তা। মজার ব্যাপার হচ্ছে মাকড়শার ঘর মূলতঃ একটি ফাঁদ। মাকড়শার আঠাল ঘরের ফাঁদে মোকামাকড় সহজেই আটকে যায়, আর মাকড়শা সেই আটকে যাওয়া পোকা-মাকড়কে খাদ্যে পরিণত করে।
 আবার মাকড়শার ঘর হচ্ছে অনেকটা মাছ ধরা জালের মত ছিদ্রযুক্ত। অর্থাৎ এই ঘরের কোন ভিত্তিমূল নেই।
 

বিগত ১৪০০ বছরে হাজার হাজার নতুন স্পেসিসের প্রাণী বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন, কিন্তু কোন প্রাণী মাকড়শার ঘরের মত এত দূর্বল ঘর বানায়  এমন কোন তথ্য কিন্তু পাওয়া যায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »